জমির পরিমাপ শতাংশ হিসাব | জমি মাপার নিয়ম এবং একক সমূহ

জমির পরিমাপ শতাংশ হিসাব

বাংলাদেশে জমির পরিমাপ: নিয়ম, সূত্র এবং পদ্ধতি

সমস্যামুক্ত জমির মালিকানা নিশ্চিত করতে, বাংলাদেশে জমির পরিমাপ এর নিয়মগুলি বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জটিলতা এড়াতে প্রায়ই জমি জরিপ করা প্রয়োজন। আপনার নিজের জমি সঠিকভাবে পরিমাপ করতে জমি পরিমাপের বিভিন্ন একক যেমন একর এবং হেক্টরের সাথে নিজেকে পরিচিত করুন। এই জ্ঞান আপনাকে বিভিন্ন ইউনিটের তুলনা এবং কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে সাহায্য করবে, প্রবিধানের সাথে সম্মতি নিশ্চিত করবে এবং সম্ভাব্য বিরোধ প্রতিরোধ করবে।

সম্ভাব্য সমস্যা প্রতিরোধ করার জন্য বাড়ি নির্মাণ বা উন্নয়নের আগে সঠিক জমি পরিমাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জমি পরিমাপের নিয়মগুলির সাথে পরিচিতি খরচ-কার্যকর পরিকল্পনার অনুমতি দেয় এবং প্রতারণামূলক অনুশীলন থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। বিভিন্ন পরিমাপ পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান থাকা অসঙ্গতি সনাক্ত করতে এবং প্রতারিত হওয়া থেকে রক্ষা করতে সক্ষম করে।

ভূমি পরিমাপের বিভিন্ন পদ্ধতি

ভূমি পরিমাপ পদ্ধতি দেশ এবং অঞ্চলের মধ্যে পরিবর্তিত হতে পারে। কিছু অঞ্চলে, নির্দিষ্ট নিয়ম ও প্রবিধানের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। যাইহোক, ব্যবহৃত পদ্ধতি নির্বিশেষে, অন্তর্নিহিত সূত্র একই থাকে।

অনেক দেশে, সরকার নথিপত্র সহ ভূমি-সম্পর্কিত কার্যকলাপের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগ করে। এখানে দুটি প্রধান সিস্টেম রয়েছে: শতাংশ-ভিত্তিক গণনা এবং সংখ্যাসূচক গণনা। এই সিস্টেমগুলি জমির জন্য ব্যবহৃত পরিমাপের ইউনিটগুলি নির্ধারণ করে।

শতাংশ-ভিত্তিক গণনায়, জমিকে একশত ভাগে ভাগ করা হয়, যাকে “এক শতাংশ” বা “এক দশমিক ভূমি” বলা হয়। এই সিস্টেম সাধারণত ব্যবহৃত এবং স্বীকৃত হয়. এই পদ্ধতিতে উচ্চতর একক হল কাঠা, বিঘা এবং একর। বিশেষ করে, 20 কাঠা সমান এক বিঘা, এবং তিন বিঘা সমান এক একর। এই পরিমাপ স্কিমটি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত এবং “স্ট্যান্ডার্ড পরিমাপ” হিসাবে ব্যাপকভাবে গৃহীত।

অতিরিক্তভাবে, স্ট্যান্ডার্ড মেজারমেন্ট সিস্টেমের পাশাপাশি হেক্টর সিস্টেমটি আনুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে নির্দিষ্ট পরিমাপের নিয়ম এবং ইউনিটগুলি যে অঞ্চল এবং দেশটিতে অবস্থিত তার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। অতএব, আপনার নির্দিষ্ট এলাকায় জমি পরিমাপ সংক্রান্ত সঠিক এবং আপ-টু-ডেট তথ্য পেতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা পেশাদারদের সাথে পরামর্শ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

শতাংশে জমি পরিমাপের নিয়ম

বাংলাদেশে জমি পরিমাপের একক হিসেবে শতাংশ বহুল ব্যবহৃত হয়। ১ শতাংশ মানে ১০০ বর্গফুট। জমি পরিমাপের সময়, আপনি আপনার জমির আকারকে বর্গফুটে পরিমাপ করে সহজেই শতাংশে রূপান্তর করতে পারেন।

শতাংশে জমি হিসাব করার পদ্ধতি

শতাংশে জমি পরিমাপ করার জন্য, আপনার জমির আয়তন বর্গফুটে পরিমাপ করুন। এরপর নিচের সূত্রটি ব্যবহার করে শতাংশে জমির হিসাব করুন:
শতাংশ=(মোটবর্গফুট÷১০০)

উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার জমি ২০০০ বর্গফুট হয়, তাহলে শতাংশ হবে:
২০শতাংশ=(২০০০÷১০০)

এটি একটি সহজ পদ্ধতি, যা আপনাকে দ্রুত জমির আকার শতাংশে বের করতে সহায়তা করবে।

জমির পরিমাপ শতাংশ হিসাব

জমির বিভিন্ন একক এবং শতাংশে রূপান্তর

বাংলাদেশে জমি মাপার সময় বিভিন্ন একক ব্যবহার করা হয়, যেমন:

  • কাঠা: ১ কাঠা = ৭২০ বর্গফুট = ৭.২ শতাংশ
  • বিঘা: ১ বিঘা = ৩৩ কাঠা = ২.৪০ একর = ৭২ শতাংশ
  • একর: ১ একর = ১০০ শতাংশ

এই রূপান্তরগুলো জানলে, আপনি সহজেই অন্য একক থেকে শতাংশে জমি পরিমাপ করতে পারবেন।

শতাংশে জমি পরিমাপের সুবিধা

শতাংশে জমি পরিমাপ করার সুবিধা হলো এটি ছোট জমির হিসাবের জন্য খুবই সহজ এবং সুবিধাজনক। যেহেতু ১ শতাংশ মাত্র ১০০ বর্গফুটের সমান, তাই শহরের ছোট প্লট বা জমির ক্ষেত্রে শতাংশ ভিত্তিক হিসাব বেশ কার্যকর।

শতাংশে জমি হিসাবের ক্ষেত্রে সতর্কতা

শতাংশে জমির হিসাব করতে গেলে জমির সঠিক আয়তন নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক জমির পরিমাপ নিশ্চিত করতে সঠিক যন্ত্রপাতি এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তির সহায়তা নেওয়া উচিত।

 বাংলাদেশে জমি মাপার পদ্ধতি

বাংলাদেশে, জমি পরিমাপের জন্য দুটি সাধারণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়:

  • চেইন পদ্ধতি
  • টেপ পদ্ধতি।

চেইন পদ্ধতি, বিশেষ করে গুন্টার চেইন, সাধারণত সরকারী জমি পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত হয়।

অন্যদিকে, আমিন বা জরিপকারীর মতো ব্যক্তিরা প্রায়ই জমি পরিমাপের জন্য একটি টেপ ব্যবহার করেন।

বৃহত্তর পরিমাণ জমি পরিমাপ করার সময় একটি চেইন ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যখন জমির ছোট প্লট পরিমাপের জন্য একটি টেপ আরও সুবিধাজনক।

অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন যে বাংলাদেশে ভূমি পরিমাপ পদ্ধতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য এবং নির্দেশনার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা পেশাদারদের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ।

জমি পরিমাপের সূত্র

জমি পরিমাপের জন্য যে পদ্ধতিই ব্যবহার করা হোক না কেন, প্রাথমিক ধাপ হিসেবে জমির ক্ষেত্রফল নির্ধারণ করা অপরিহার্য। পরিমাপ করা জমির প্লটের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে জমির ক্ষেত্রফলের গণনা নিয়ন্ত্রণকারী নিয়মগুলি পরিবর্তিত হতে পারে।

যেমন-

বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল = বাহু X বাহু

কর্ণ = এক বাহু X ১.৪১৪

পরীসিমা = এক বাহু X ৪

উদাহরণ

ধরুন আমাদের কাছে একটি বর্গাকার আকৃতির জমি আছে যার বাহুগুলি ১২০টি বর্গ লিঙ্ক রয়েছে। এই বর্গাকার প্লটের ক্ষেত্রফল নির্ণয় করতে, আমরা একপাশের দৈর্ঘ্য নিজেই গুণ করি:

ক্ষেত্রফল = পার্শ্ব দৈর্ঘ্য x পার্শ্ব দৈর্ঘ্য
= ১২০ x ১২০
= ১৪,৪০০ বর্গ লিঙ্ক

এখন, গুন্টারের চেইন জমির পরিমাপ বিবেচনা করা যাক। এই সিস্টেমে, আমরা জানি যে ১ শতাংশ হল ১,০০০ বর্গ লিঙ্কের সমান।

এই জ্ঞান প্রয়োগ করে, আমরা মোট বর্গ লিঙ্ক এলাকার উপর ভিত্তি করে জমির শতাংশ নির্ধারণ করতে পারি। যেহেতু ১ বর্গক্ষেত্র লিঙ্ক ১,০০০ অংশের এক অংশ শতাংশের সমতুল্য, তাই আমরা শতাংশ পেতে মোট বর্গক্ষেত্র লিঙ্ক এলাকা (১৪,৪০০) ১,০০০ দ্বারা ভাগ করতে পারি:

১৪,৪০০ বর্গ লিঙ্ক = ১৪.৪০ শতাংশ

সুতরাং, এই ক্ষেত্রে, জমির পরিমাণ হবে ১৪.৪০ শতাংশ।

মনে রাখবেনঃ

ব্যবহারিক পরিস্থিতিতে, জমি বিভিন্ন আকারে আসতে পারে, শুধু আয়তাকার বা বর্গাকার প্লট নয়। অতএব, বিভিন্ন ভূমি আকারের ক্ষেত্রফল পরিমাপের জন্য বিভিন্ন সূত্রের সাথে পরিচিত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

ভূমি পরিমাপের গান্টার শিকল এর লিংক/জরীপ/কড়ি পদ্ধতি

Gunter’s Chain, Ganter’s Chain বা সার্ভে চেইন নামেও পরিচিত, ভূমি পরিমাপের একটি বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি। সঠিক এবং সহজ ভূমি পরিমাপের সুবিধার্থে ইংরেজ বিজ্ঞানী এডমন্ড গুন্টার এটি আবিষ্কার করেছিলেন।

গুন্টারের পদ্ধতিতে ব্যবহৃত চেইনটি সাধারণত স্টিলের তৈরি এবং এর দৈর্ঘ্য প্রায় ২০.৩১ মিটার বা ৬৬ ফুট। এটি ১০০টি ছোট অংশে বিভক্ত, যা লিঙ্ক, সার্ভে বা লিঙ্ক হিসাবে পরিচিত।

বাংলাদেশে, গান্টারের চেইন পদ্ধতি, যা গুন্টারের চেইনের উপর ভিত্তি করে তৈরি, জমি পরিমাপ এবং একর, সেন্ট এবং মাইলফলকের মতো মান নির্ধারণের জন্য জনপ্রিয়।

দৈর্ঘ্য ১০ চেইন × প্রস্থে ১ চেইন = ১০ বর্গ চেইন = ১ একর

গুন্টারের চেইন ব্যবহার করে জমি পরিমাপ করার জন্য, ১০ চেইনের দৈর্ঘ্য ১ চেইনের প্রস্থ দ্বারা গুণ করলে ১০ বর্গ চেইনের সমান, যা ১ একরের সমান।

চেইন বা গান্টার শিকল নস বা ফুলি স্থাপন


গান্টার শিকলে ১০ লিংক বা ৭৯.২ ইঞ্চি পরপর নস বা ফুলি স্থাপন করা হয়।

  • ২০ লিংক বা ১৫৮.৪ ইঞ্চি পর স্থাপিত হয় নস বা ফুলি
  • ৩০ লিংক বা ২৩৭.৩ ইঞ্চি পর স্থাপিত হয় নস বা ফুলি
  • ৪০ লিংক বা ৩১৬.৮ ইঞ্চি পর স্থাপিত হয় নস বা ফুলি
  • ৫০ লিংক বা ৩৯৬.০ ইঞ্চি পর স্থাপিত হয় নস বা ফুলি
  • ৮০ গান্টার বা ১৭৬০ গজ পর স্থাপিত হয় মাইল ষ্টোন

লিংক/ জরীপ বা কড়ি অনুযায়ী অনুযায়ী জমি পরিমাপ করার পদ্ধতি

গান্টার শিকল বা চেইন ব্যবহার করে জমি পরিমাপের পদ্ধতিকে গান্টার শিকল বা চেইন পদ্ধতি বলা হয়। এই কৌশলটি রাজনৈতিক মহলে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

একটি চেইন বা শিকলের একটি লিংক হলেও, সেটিতে একশত লিংক থাকে। এই ব্যবস্থাটি নিম্নলিখিত রকমে বিবর্তিত করা যায়।

১ লিংক = ৭.৯ ইঞ্চি

৫ লিংক = ৩ ফুট ৩.৬ ইঞ্চি

১০ লিংক = ৬ ফুট ৭.২ ইঞ্চি

১৫ লিংক = ৯ ফুট ১০.৮ ইঞ্চি 

২০ লিংক = ১৩ ফুট ২.৪ ইঞ্চি

২৫ লিংক = ১৬ ফুট ৬.০ ইঞ্চি

৪০ লিংক = ২৬ ফুট ৪.৮ ইঞ্চি

৫০ লিংক = ৩৩ ফুট

১০০ লিংক = ৬৬ ফুট

১০০ লিংক = ১ গান্টার শিকল বা ১ চেইন

১০০০ বর্গলিংক = এক শতক

১,০০,০০০ বর্গলিংক = এক একর

ফিতা পদ্ধতি (বর্গগজ, বর্গফুট হিসাবে ভূমি পরিমাপের নিয়ম)

ফিতা দিয়ে জমি মেপে এর বর্গগজ বা বর্গফুট বের করে জমি পরিমাপ করা হয় বলে একে ফিতা পদ্ধতি বলা হয়।

জমি মাপার সুত্রানুাসারে ক্ষেত্রফল বের করে বিভিন্ন হিসাবে ভূমি পরিমাপ করা হয়। বর্গগজ বা বর্গফুট হিসাবে জমি মাপার হিসাব নিম্নরুপ:

১ একর = ৪৮৪০ বর্গগজ = ৪৩৫৬০ বর্গফুট 

অর্থাৎ ৪৮৪০ বর্গগজ বা ৪৩৫৬০ বর্গফুট জমির পরিমাণ হচ্ছে ১ একর।

১ বিঘা = ১৬১৩ বর্গগজ = ১৪৫২০ বর্গফুট

অর্থাৎ ১৬১৩ বর্গগজ বা ১৪৫২০ বর্গফুট জমির পরিমাণ হচ্ছে ১ বিঘা।

১ কাঠা = ৮০.১৬ বর্গগজ = ৭২১.৪৬ বর্গফুট

১ ছটাক = ৫.০১ বর্গগজ = ৪৫.০৯ বর্গফুট

১ বর্গমিটার = ১.১৯৬ বর্গগজ = ১০.৭৬ বর্গফুট

বর্গগজ বা বর্গফুট জমির ব্যাখ্যা

আমরা জানি, জমি পরিমাপ করার জন্য ভূমির ক্ষেত্রফল বের করে জমির পরিমান হিসাব করা হয়। তাই বর্গগজ বা বর্গফুট এর ক্ষেত্রে,

কোন জমির ক্ষেত্রফল যদি ৪৮৪০ বর্গগজ কিংবা ৪৩৫৬০ বর্গফুট হয় তাহলে জমির পরিমান হবে ১ একর।

একটি উদাহরণ: 

মনে করুন, একটি জমির দৈর্ঘ্য ২২০ গজ এবং প্রস্থ ২২ গজ হলে জমির পরিমান কত হবে?

সুত্রানুসারে ক্ষেত্রফল = দৈর্ঘ্য x প্রস্থ

                                    = ২২০ x ২২

                                    = ৪৮৪০ বর্গগজ = ১ একর

কাঠা, বিঘা, একর অনুযায়ী জমি মাপার হিসাব

১ কাঠা = ১৬ ছটাক = ১.৬৫ শতাংশ = ১৬৫ অযুতাংশ

১ বিঘা = ৩৩ শতাংশ = ২০ কাঠা

১ একর = ১০০ শতাংশ = ৬০.৬ কাঠা = ৩.০৩ বিঘা

ব্যাখ্যাঃ ১০০ শতাংশ কিংবা এক হাজার সহস্রাংশ কিংবা ১০ হাজার অযুতাংশ পরিমান = ১ একর জমি। দশমিক বিন্দুর (.) পরে চার অংক হলে সাধারণত অযুতাংশ পড়া হয়।

কাঠা, বিঘা, একর অনুযায়ী জমি মাপার হিসাব

কিলোমিটার, মিটার, সেন্টিমিটার, মিলিমিটার, মাইক্রোমিটার, মাইল, গজ, ফুট, ইঞ্চি ইত্যাদি হিসাবের সম্পর্ক

১ কিলোমিটার = ১০০০ মিটার = ১০৯৩.৬১ গজ

১ মিটার = ১০০ সেন্টিমিটার

১ সেন্টিমিটার = ১০ মিলিমিটার

১ মিলিমিটার = ১০০০ মাইক্রোমিটার

১ মাইক্রোমিটার = ১০০০ ন্যানোমিটার

১ মাইল = ১৭৬০ গজ = ১.৬ কিলোমিটার

১ গজ = ৩ ফুট

১ ফুট = ১২ ইঞ্চি

১ ইঞ্চি = ২.৫৪ সেন্টিমিটার

জমি পরিমাপ করার ক্ষেত্রে ছটাক, বিঘা ও কাঠার সম্পর্ক

১ ছটাক = ২০ গন্ডা = ৪৫ বর্গফুট

১ কাঠা = ১৬ ছটাক = ৭২০ বর্গফুট

১ বিঘা = ৬৪০০ বর্গহাত = ২০ কাঠা = ৩৩০০০ বর্গলিংক = ১৪৪০০ বর্গফুট

জমির পরিমাণ খুব বেশি হলে হেক্টর অনুযায়ী হিসাব করা হয। জমির পরিমানে হেক্টরের সম্পর্ক হচ্ছে-

১ হেক্টর = ২.৪৭ একর = ৭.৪৭ বিঘা

জমির পরিমান বের করার বিভিন্ন আঞ্চলিক পরিমাপ

অঞ্চলভেদে বিভিন্ন প্রকারে জমি পরিমাপ করার পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। বাংলাদেশ ও দেশেরে আশেপাশে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরণের জমির পরিমাপ করার হিসাব যেমন- কানি-গন্ডা, বিঘা-কাঠা ইত্যাতি প্রচলন আছে।

অঞ্চলভেদে এই পরিমাপগুলোর আয়তনও বিভিন্ন রকমের লক্ষ করা যায়।

বিভিন্ন অঞ্চলে জমির পরিমাপ করার বিভিন্ন হলেও সারা দেশে সরকারিভাবে জমি পরিমাপ করা হয় একর, শতক পদ্ধতিতে।

শতাংশের হিসাব সারা দেশে সমান অর্থাৎ অঞ্চলভেদে শতকের আয়তনের কোন পরিবর্তন হয় না।

কানি পরিমাপের প্রকারভেদ

কানি দুই প্রকার । যথা-

এক. কাচ্চা কানি

দুই. সাই কানি

কাচ্চা কানি: ৪০ শতকে এক কাচ্চা কানি। কাচ্চা কানি ৪০ শতাংশে হওয়ার কারণে একে ৪০ শতকের কানিও বলা হয়।

সাই কানি: অঞ্চলভেদে এটির তারতম্য রয়েছে। কোথাও ১২০ ধরা হয় আবার কোথাও ১৬০ শতকে এক সাই কানি ধরা হয়।

কানি গন্ডা হিসাবের সাথে বিভিন্ন হিসাবের সম্পর্ক

১ গন্ডা = ৪ কড়া = ৮৪৬ বর্গফুট

১ কড়া = ২১৬ বর্গফুট

১ কানি = ১৭২৮০ বর্গফুট = ১৯৩৬ বর্গগজ = ১৬১৯ বর্গমিটার = ৪০ বর্গলিংক

১ একর = ২ কানি ১০ গন্ডা = ১০ বর্গ চেইন = ১০০ শতক = ৪০৪৭ বর্গমিটার = ৩ বিঘা ৮ ছটাক।

এক একর জমির সাথে বিভিন্ন হিসাবের তুলনা ও সম্পর্ক

ভূমি পরিমাপ করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন রকম পদ্ধতি চালু থাকলেও একর হিসাবে জমি পরিমাপ করা হয় প্রায় সব জায়গায়।

তাই এককের সাথে বিভিন্ন হিসাবের সম্পর্ক জানা থাকলে আপনি সহজেই যে কোন জায়গার জমির হিসাব সহজেই বুঝতে পারবেন।

নিচে এক একর জমির সাথে বিভিন্ন হিসাবের তুলনা বা সম্পর্ক দেয়া হলো-

১ একর = ১০০ শতক = ১০ বর্গ চেইন = ৬০.০৬ কাঠা (৩৩ শতাংশে এক বিঘা হিসাবে) = ৩ বিঘা ৯ ছটাক = ২ কানি ১০ গন্ডা (৪০ শতাংশে কানি ও ২ শতাংশে গন্ডা ধরে) = ৪০৪৭ বর্গমিটার = ৪৮৪০ বর্গগজ = ১৯৩৬০ বর্গহাত = ৪৩৫৬০ বর্গফুট = ১০০০০০ বর্গলিংক।

এক বিঘার জমির সাথে বিভিন্ন পরিমাপ এককের সম্পর্ক বা তুলনা

জমি পরিমাপ করার ক্ষেত্রে বিঘার প্রচলন প্রায় সারা দেশে রয়েছে। যদিও বিভিন্ন হিসাবে বিঘা ধরে হিসাব করা হয়।

সুতরাং বিঘার সাথে বিভিন্ন হিসাবের সম্পর্ক জানা থাকলে সহজেই যে কোন জমির পরিমাপ বুঝতে সহজ হয়ে যাবে।

নিচে এক বিঘা ভূমির সাথে বিভিন্ন পরিমাপের সাথে তুলনা বা সম্পর্ক দেওয়া হলো-

১ বিঘা = ২০ কাঠা =  ৩৩ শতাংশ = ১৬০০ বর্গগজ = ৬৪০০ বর্গহাত = ১৪৪০০ বর্গফুট = ৩৩০০০ বর্গলিংক = ১৬ গন্ডা, ২ কড়া, ২ ক্রান্তি

এক শতাংশ জমির সাথে বিভিন্ন হিসাবের তুলনা বা সম্পর্ক

সারা দেশে শতাংশের কোন পরিবর্তন হয় না। এছাড়াও এটি সরকারিভাবে দেশজুরে পরিমাপ করা হয়। এক শতাংশ জমির সাথে বিভিন্ন হিসাবের তুলনা বা সম্পর্ক জানা থাকলে সহজেই বিভিন্ন জায়গার জমির মাপ বুঝতে অনেক সহজ হবে।

নিচে ১ শতাংশ জমির সাথে বিভিন্ন ভূমি পরিমাপের সাথে তুলনা বা সম্পর্ক দেখানো হলো।

এক শতাংশ = ৪৩৫.৬০ বর্গফুট = ৪৮.৪০ বর্গগজ = ৪০.৪৬ বর্গমিটার = ১৯৪.৬০ বর্গহাত = ১০০০ বর্গলিংক 

কাঠার সাথে সতাংশের সম্পর্ক

১ কাঠা = ১.৬৫ শতাংশ ( ৩৩ এর মাপে)

১ কাঠা = ১.৫০ শতাংশ ( ৩০ এর মাপে)

 আধুনিক এককের অংশ লিখার নিয়ম ( অযুতাংশের নমুনা)

আধুনিক একর হিসাবে ভূমি অফিসে বিভিন্ন দলিল পত্রে বা খাজনা আদায়ের রশিদে একর বা এককের অংশ লেখা হয়। আপনার বুঝার সুবিধার্থে নিচে বিভিন্ন অংশের নমুনা দেওয়া হলো।

০.০০২৫ একর = কোয়ার্টার শতাংশ

০.০০৫ একর = আধা শতাংশ

০.০০৭৫ একর = পৌনে এক শতাংশ

০.০১ একর = এক শতাংশ

০.০১২৫ একর = সোয়া শতাংশ

০.০১৫০ একর = দেড় শতাংশ

০.০১৭৫ একর =  পৌনে দুই শতাংশ

০.০২ একর = দুই শতাংশ

০.১০ একর = দশ শতাংশ

১.০ একর = ১ একর = ১০০ শতাংশ

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)

১. জমি পরিমাপ কেন গুরুত্বপূর্ণ?

জমি পরিমাপ গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি জমির প্রকৃত আকার নির্ধারণ করতে সহায়তা করে, যা ভূমি মালিকানার জটিলতা এড়াতে এবং বিরোধ প্রতিরোধ করতে সহায়ক।

২. বাংলাদেশে জমি পরিমাপের প্রচলিত এককগুলি কী কী?

বাংলাদেশে জমি পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত প্রচলিত এককগুলোর মধ্যে রয়েছে শতাংশ, কাঠা, বিঘা, একর, এবং হেক্টর।

৩. শতাংশে জমি পরিমাপ কীভাবে করা হয়?

শতাংশে জমি পরিমাপ করতে, জমির মোট আয়তন (বর্গফুটে) ১০০ দ্বারা ভাগ করতে হয়। উদাহরণস্বরূপ, ২০০০ বর্গফুট জমি হলে শতাংশ হবে ২০ শতাংশ।

৪. ১ কাঠা জমি কত শতাংশ সমান?

১ কাঠা জমি সাধারণত ৭.২ শতাংশ সমান।

৫. বিঘা ও একরের মধ্যে কী সম্পর্ক?

১ বিঘা সমান ৩৩ শতাংশ বা প্রায় ২.৪০ একর।

৬. জমি পরিমাপের জন্য কোন পদ্ধতিগুলি বাংলাদেশে বেশি ব্যবহৃত হয়?

বাংলাদেশে জমি পরিমাপের দুটি সাধারণ পদ্ধতি হল চেইন পদ্ধতি এবং টেপ পদ্ধতি। বড় জমির জন্য চেইন পদ্ধতি এবং ছোট জমির জন্য টেপ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

৭. চেইন পদ্ধতিতে জমি পরিমাপ কীভাবে করা হয়?

চেইন পদ্ধতিতে জমি পরিমাপ করতে গান্টার চেইন বা শিকল ব্যবহার করা হয়, যেখানে ১০০টি লিংক থাকে। এই পদ্ধতিতে জমির আয়তন নির্ধারণ করা হয় এবং একর বা শতাংশে হিসাব করা হয়।

৮. টেপ পদ্ধতিতে জমি পরিমাপ কীভাবে করা হয়?

টেপ পদ্ধতিতে জমির দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ পরিমাপ করে জমির আয়তন বের করা হয়, যা সাধারণত বর্গগজ বা বর্গফুটে হিসাব করা হয়।

৯. জমির মাপের জন্য একর এবং হেক্টরের মধ্যে কী সম্পর্ক?

১ হেক্টর সমান ২.৪৭ একর।

১০. বাংলাদেশের রিয়েল এস্টেট শিল্পের বর্তমান অবস্থা কী?

বাংলাদেশের রিয়েল এস্টেট শিল্প দ্রুত বর্ধনশীল, বিশেষত ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেটের মতো শহর এলাকায়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে আবাসিক এবং বাণিজ্যিক সম্পত্তির চাহিদাও বাড়ছে।

Join The Discussion

Compare listings

Compare